কেমিক্যালসহ ৮০০ টন বিপজ্জনক পণ্য নিয়ে বিপাকে চট্টগ্রাম বন্দর


অগ্নিঝুঁকি এড়ানোর পাশাপাশি নিরাপত্তা নিশ্চিতে আমদানি করা কেমিক্যাল এবং ডেঞ্জারাস কার্গোর ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। বিপজ্জনক সব ধরনের পণ্য যেমন জাহাজ থেকে নামানোর সঙ্গে সঙ্গে ডেলিভারি নিতে হবে, তেমনি ট্যারিফও বাড়ানো হচ্ছে। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে ৫০০ মেট্রিক টন কেমিক্যাল এবং বিপজ্জনক পণ্যবাহী ৩০০ কনটেইনারের অবস্থান রয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের শুধু পি শেডেই ৪শ মেট্রিক টন ওজনের ১ হাজার ৬ প্যাকেজ কেমিকেল ও বিপজ্জনক মালামাল রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে বন্দরের এক চিঠিতে। এরমধ্যে দীর্ঘদিনের পুরাতন ও ধ্বংসযোগ্য কেমিক্যাল এবং ডেঞ্জারাস কার্গোর পরিমাণ ৫৯ মেট্রিক টন ওজনের ১৯৬ প্যাকেজ। পড়ে থাকা এসব পণ্য নিলামের পাশাপাশি নতুনভাবে আমদানি করা ডেঞ্জারাস কার্গো দ্রুত ডেলিভারি করতে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, কার্গোভেদে সময় এমনভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে, যাতে দ্রুত খালাস শেষে বন্দর থেকে বের হয়ে যায়। কোনো কার্গো পণ্য বন্দরে অহেতুক পড়ে থাকবে না।
শুধুই যে পি শেডে ডেঞ্জারাস কার্গো রয়েছে, তা কিন্তু নয়। বন্দরের বিভিন্ন ইয়ার্ডে বিপজ্জনক পণ্য বোঝাই ২৮৬ টিইইউএস কনটেইনার রয়েছে। এরমধ্যে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে আরও অন্তত ৪০টি কনটেইনার। এমনকি দীর্ঘদিনের পুরানো বেশকিছু কনটেইনার ছিদ্র হয়ে কেমিকেলও বাইরে ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি শফিকুল আলম জুয়েল বলেন, এসব কনটেইনারের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হলে ক্ষতির টাকা যেমন পাওয়া যাচ্ছে না, মিলছে না কোনো সহযোগিতাও। পুরোটাই ব্যবসায়ীদের লোকসান।
এ অবস্থায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে ডেঞ্জারাস কার্গোর ট্যারিফ বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, যে সব কার্গো বন্দরে ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়, সেগুলোর জন্য ট্যারিফ বাড়ানো হবে।
তবে ডেঞ্জারাস কার্গোর ক্ষেত্রে কড়াকড়ি নিয়ে কিছুটা সংকটের মুখে পড়েছে মেইন লাইন অপারেটর প্রতিষ্ঠানগুলো। বিশেষ করে আমদানি করা কেমিকেল কিংবা ডেঞ্জারাস কার্গো আমদানিকারক ছাড় করাতে বিলম্ব করলেও মেইন লাইন অপারেটরদেরকেই নানামুখী জটিলতায় পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এমএসসি শিপিং লিমিটেডের হেড অব অপারেশন আজমীর হোসাইন চৌধুরী বলেন, আমদানিকারক কখন পণ্য খালাস করবে এটা তার বিষয়। তাদের দ্রুত খালাসের জন্য অনুরোধ করতে পারি। এছাড়া কিছু করার নেই।
অবশ্য গত বছরের শেষ দুই মাসে ৫৯ কনটেইনার বোঝাই কেমিকেল এবং বিপজ্জনক পণ্য ধ্বংস করেছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ। এরমধ্যে ১৫ থেকে ২০ বছরের পুরানো কেমিকেলও ছিল।