অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী পেলেন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র

অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে (৭৪) হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ শিশির রঞ্জন চক্রবর্তী।

এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীর চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গঠিত আট সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের সভাপতি শিশির রঞ্জন চক্রবর্তী।

তিনি বলেন, সাবেক বিচারপতি এখন অনেকটা স্বাভাবিক ও সুস্থ। স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারেন। ঘা শুকিয়েছে। সার্বিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মেডিকেল বোর্ড তাঁকে ছাড়পত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তাঁকে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করার কথা আছে।

গত ২৩ আগস্ট সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় রাত সাড়ে ৯টার দিকে শামসুদ্দিন চৌধুরীকে স্থানীয় জনতার সহায়তায় আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। পরদিন সকালে তাঁকে কানাইঘাট থানায় হস্তান্তর করা হয়। ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হলে সিলেটের জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১-এর বিচারক আলমগীর হোসাইন তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আদালতে প্রবেশের সময় আদালত প্রাঙ্গণে থাকা দলবদ্ধ কিছু ব্যক্তি শামসুদ্দিন চৌধুরীকে বেধড়ক কিলঘুষি মারেন। অনেকে ডিম ছোড়ার পাশাপাশি জুতাও নিক্ষেপ করেন। কেউ কেউ শামসুদ্দিন চৌধুরীর নাম উল্লেখ করে বিভিন্ন স্লোগান দেন এবং তাঁকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। দলবদ্ধ লোকজনের আক্রমণ থেকে বাঁচিয়ে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা শামসুদ্দিন চৌধুরীকে আদালত ভবনে ঢোকান।

সিলেটের কারাগার সূত্রে জানা যায়, ২৪ আগস্ট বিকেলে আদালত থেকে শামসুদ্দিন চৌধুরীকে শহরতলির বাদাঘাট এলাকায় সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক তাঁকে ‘আনফিট’ উল্লেখ করে সিলেট এম এ জি ওসমানী হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন। সে অনুযায়ী শামসুদ্দিন চৌধুরীকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁকে সার্জারি ওয়ার্ডের অধীনে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। ওই রাতেই তাঁর স্ক্রোটাল ইনজুরির (অণ্ডকোষে আঘাত) অস্ত্রোপচার হয়। এর পর থেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাবেক এই বিচারপতি।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সে সময় জানিয়েছিল, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীর হার্টে সমস্যা আছে। ১০ বছর আগে তিনি বাইপাস করেছিলেন। এ ছাড়া তাঁর ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে।

সিলেটের কারা উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন্স) মো. ছগির মিয়া বলেন, হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়া অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরীকে আজ বৃহস্পতিবারই সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হবে। সেখানে তিনি কারাবিধি অনুযায়ী ডিভিশন পাবেন।