সুন্দরবন ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ সংরক্ষণে জার্মানির সঙ্গে দুই চুক্ত
সুন্দরবন ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ সংরক্ষণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও জার্মানির মধ্যে দুটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সচিবালয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশের পক্ষে মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ এবং জার্মানির পক্ষে ডয়েচে গেসেলশ্যাফ্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল জুসামেনারবিটের (জিআইজেড) ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্টিনা বুরকার্ড চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
ফারহিনা আহমেদ জানিয়েছেন, সুন্দরবন ম্যানগ্রোভস এবং সামুদ্রিক সুরক্ষিত এলাকা (এমপিএ) সোয়াচ নো গ্রাউন্ডের টেকসই ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে ওই দুটি স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রকল্পটি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যৌথ প্রচেষ্টায় বাস্তবায়ন করা হবে।
তিনি বলেন, প্রকল্পের লক্ষ্য হচ্ছে—এমপিএ সংলগ্ন উপকূলীয় সম্প্রদায়ের জেলে, নারী ও যুবকদের অন্তর্ভুক্ত করে দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ এবং স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে সহযোগিতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশে সমুদ্র সংরক্ষণকে শক্তিশালী করা।
মূল উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে—পরিকল্পনা ও নজরদারি ক্ষমতা বৃদ্ধি, বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ, ডিজিটাল সরঞ্জামগুলোর মাধ্যমে জ্ঞানভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণকে শক্তিশালী করা, উপকূলীয় জনসংখ্যার মধ্যে সামুদ্রিক সুরক্ষার জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং সামুদ্রিক সংরক্ষণে সক্রিয় অংশগ্রহণ।
ড. ফারহিনা বলেন, সুন্দরবনের টেকসই ব্যবস্থাপনার জন্য আঞ্চলিক সহযোগিতা ও অর্থায়ন জোরদার এবং বাংলাদেশ ও ভারতের বঙ্গোপসাগরে উপকূলীয় ইকোসিস্টেম পুনরুদ্ধার করা (সুন্দর-বে) প্রকল্পটি মার্চ ২০২৪ থেকে ফেব্রুয়ারি ২০২৭ পর্যন্ত বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে সুন্দরবন সংরক্ষণে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রচেষ্টার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, সুন্দর-বে প্রকল্পের লক্ষ্য হলো—দুই দেশের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি সমন্বয় উন্নত করা, সুন্দরবন সংরক্ষণে সহায়তা করা এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে নারী ও প্রান্তিক গোষ্ঠীর জন্য ইকোসিস্টেম পরিষেবা সরবরাহ করা। প্রকল্পটি প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে, যৌথ প্রশিক্ষণ কর্মসূচির প্রচার করবে এবং টেকসই আয়-উৎপাদনমূলক কার্যক্রম ও পরিবেশগত শিক্ষার মাধ্যমে স্থানীয় সম্প্রদায়কে সহায়তা করবে।
উভয় প্রকল্পই জীববৈচিত্র্য এবং প্রাকৃতিক সম্পদের সুরক্ষার ওপর জোর দিয়ে লাইফ বিলো ওয়াটার (SDG 14) এবং লাইফ অন ল্যান্ড (SDG 15) এর টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যে (SDGs) অবদান রাখবে। এই উদ্যোগগুলো এই অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ বাস্তুতন্ত্র রক্ষা এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ ও জার্মানির অঙ্গীকারের প্রতিফলন।
অনুষ্ঠানে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. মোশাররফ হোসেন, অতিরিক্ত সচিব তপন কুমার বিশ্বাসসহ মন্ত্রণালয় ও জিআইজেডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।