প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত পরিবর্তনই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত: গণশিক্ষা উপদেষ্টা


প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়ন ও গুণগত পরিবর্তনই আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। একজন শিক্ষার্থীর জীবনের ভিত্তি তৈরির মূল ধাপ প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিশুদের শিক্ষার ভিত তৈরিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের সবার নিরলসভাবে কাজ করে যেতে হবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা: বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার আজ ঢাকার মিরপুরস্থ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে এক চুক্তিপত্র স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক কল্যাণ ট্রাস্টের "কল্যাণ ট্রাস্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম" এপ্লিকেশন সফটওয়্যারের সেবাসমূহ সোনালী ব্যাংক পিএলসি'র নিজস্ব সফটওয়্যার 'সোনালী গেটওয়ে' এর মাধ্যমে আদায়ের নিমিত্তে চুক্তিপত্র স্বাক্ষর ও সফটওয়্যার লঞ্চিং কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মোঃ আব্দুল হাকিম এবং সোনালী ব্যাংক পিএলসি'র ব্যবস্থাপনা পরিচালক শওকত আলী খান নিজ নিজ পক্ষে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব আবু তাহের মোঃ মাসুদ রানা এবং সোনালী ব্যাংক পিএলসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা আরো বলেন, "কল্যাণ ট্রাস্ট ম্যানেজমেন্ট ও সোনালী ব্যাংক পিএলসির আজকের চুক্তি সাক্ষরের মাধ্যমে আমরা একটি আইটি বেইজড সিস্টেমে প্রবেশ করলাম, এর মধ্য দিয়ে কল্যাণ ট্রাস্টের শিক্ষকদের তহবিলের স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে এবং শিক্ষকদের বার্ষিক তহবিল প্রদান সহজ হবে।
উল্লেখ্য, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কল্যাণার্থে শিক্ষক কল্যাণ ট্রাস্ট ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ২০২৩ সালে শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট আইন প্রণীত হয়। শিক্ষকদের বার্ষিক চাঁদার হার বর্তমানে ২০০ টাকা। শিক্ষক ও পোষ্যদের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্য প্রদান; পোষ্যদের শিক্ষা সহায়তার উদ্দেশ্যে এককালীন আর্থিক সহায়তা ও বৃত্তি প্রদান; পোষ্যদের জন্য বৃত্তিমূলক ও অন্যান্য পেশাগত প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে আর্থিক সহায়তা প্রদান; চাকরিরত অবস্থায় কোন শিক্ষকের মৃত্যু হলে যদি ঐ শিক্ষকের অপ্রাপ্তবয়স্ক, প্রতিবন্ধী, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন বা তৃতীয় লিঙ্গের সন্তান থাকে, তাহলে উক্ত সন্তান প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত তার লেখাপড়ার খরচ ট্রাস্টের তহবিল হতে প্রদান; শিক্ষকদের নিকট হতে এককালীন অর্থ ও বার্ষিক চাঁদা সংগ্রহ ও রক্ষণাবেক্ষণ করা; চাকরিরত অবস্থায় কোন শিক্ষকের মৃত্যু হলে তার পোষ্যগণ নির্ধারিত হারে ও পদ্ধতিতে এককালীন অনুদান প্রাপ্য হবেন ইত্যাদি। শিক্ষকদের জটিল ও ব্যয়বহুল চিকিৎসা অনুদান সর্বোচ্চ দুই লক্ষ টাকা, শিক্ষকদের সাধারণ চিকিৎসা অনুদান (শিক্ষকের নিজের) সর্বোচ্চ ৪০ হাজার টাকা, শিক্ষকদের সাধারণ চিকিৎসা অনুদান (পোষ্যদের) সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা, শিক্ষকের সন্তানদের ক্যাটাগরি ভিত্তিক উচ্চশিক্ষা বৃত্তি এককালীন আট থেকে দশ হাজার টাকা। ট্রাস্টের ছয়টি স্থায়ী আমানতে প্রায় ৩৮ কোটি টাকা রয়েছে। স্থায়ী আমানতের লভ্যাংশ থেকে প্রাপ্ত অর্থ অফিস পরিচালনা এবং শিক্ষকদের আর্থিক সহায়তার কাজে ব্যয় হয়।
উপদেষ্টা পরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কমপ্লেক্সে 'শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট' অফিস পরিদর্শন করেন। শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট এর পরিচালক সুরাইয়া পারভীন উপদেষ্টাকে স্বাগত জানান। মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মোহাম্মদ মাসুদ রানা এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডঃ মোঃ আব্দুল হাকিম এর সময় উপস্থিত ছিলেন।