লুট হওয়া পাথরবোঝাই ১৩০ ট্রাক জব্দ, ফেলা হচ্ছে সাদা পাথর এলাকায়

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:১৪ আগস্ট ২০২৫, ১২:৩৯ পিএম
লুট হওয়া পাথরবোঝাই ১৩০ ট্রাক জব্দ, ফেলা হচ্ছে সাদা পাথর এলাকায়

সিলেট জেলা ও বিভাগীয় প্রশাসনের উদ্যোগে লুট হওয়া সাদা পাথর পূর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে তল্লাশিচৌকি বসিয়ে অভিযান শুরু করেছে যৌথ বাহিনী।

বুধবার (১৩ আগস্ট) দিবাগত রাতেই শুরু হয় এই অভিযান। সারারাত বিভিন্ন স্থানে অভিযান চলে। এসব অভিযানে পাথরবোঝাই ১৩০টি ট্রাক জব্দ করা হয়।

উদ্ধার হওয়া সাদা পাথর নৌকা করে নদীর পাড়ে রাখতে দেখা গেছে পাথর শ্রমিকদের। এ সময় সেনাবাহিনীর একটি দলকে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।

অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ। তিনি বলেন, “গতকাল রাত থেকে যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরু হয়েছে। এখনও চলছে। অভিযানে জব্দ করা পাথর আবার সাদাপাথরে নিয়ে রাখা হবে। এছাড়া আজ কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাটে পৃথক দুটি তল্লাশিচৌকি স্থাপন করে পাথর তোলা বন্ধে সার্বক্ষণিক নজরদারি শুরু হবে।”

সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের সিলেট ক্লাবের সামনে গতকাল রাতে যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরু হয়। অভিযানে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা ছিলেন। এ সময় কোম্পানীগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা পাথরবোঝাই ট্রাক আটক করা হয়। এসব ট্রাক পাথর নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত পাথরবোঝাই ১৩০টি ট্রাকের পাথর জব্দ করা হয়।

অভিযান পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সিলেট সেনা নিবাসের ৩৪ বীর মেজর মো. রাজিব হোসাইন বলেন, “ইতোমধ্যে চুরি হওয়া পাথর অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়ার প্রমাণ মিলেছে। যেসব পরিবহনে সাদা পাথর পাওয়া যাচ্ছে সেগুলো জব্দ করে অভিযান শেষে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

সম্প্রতি দেশ-বিদেশে সুপরিচিত পর্যটনকেন্দ্র কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদাপাথরের অন্তত ৮০ শতাংশ পাথর সাবাড় হওয়ায় দেশব্যাপী ব্যাপক সমালোচনা তৈরি হয়। প্রশাসন এখন লুট হওয়া পাথর জব্দে ও লুটপাট ঠেকাতে তৎপর হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরপর সিলেট জেলার ৮টি পাথরকোয়ারি ও কোয়ারিবহির্ভূত ১০টি এলাকা থেকে পাথর লুটপাট শুরু হয়। বিশেষ করে কোম্পানীগঞ্জের শাহ আরেফিন টিলা, ভোলাগঞ্জ পাথরকোয়ারি ও সংরক্ষিত বাঙ্কার এলাকা এবং গোয়াইনঘাটের প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) জাফলং ও পর্যটনকেন্দ্র বিছনাকান্দি থেকে গণহারে পাথর লুট হয়।

এদিকে পাথর লুট বন্ধে করণীয় নির্ধারণে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বুধবার বৈঠক হয়। বৈঠক থেকে সর্বসম্মতিতে পাঁচটি সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্তগুলো হলো- জাফলং ইসিএ এলাকা ও সাদাপাথর এলাকায় ২৪ ঘণ্টা যৌথ বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে; গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় পুলিশের তল্লাশিচৌকিতে যৌথ বাহিনী সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে; পাথর ভাঙার অবৈধ যন্ত্রের বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্নসহ বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের অভিযান চলবে; পাথর চুরির সঙ্গে জড়িত সবাইকে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে ও চুরি হওয়া পাথর উদ্ধার করে আগের অবস্থানে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।