শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের কলিজা খুলে ফেলার হুমকি সাবেক এমপির


কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. শামছুল ইসলামকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও হুমকি দিয়েছেন কুমিল্লা-১০ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি নেতা আবদুল গফুর ভূঁইয়া।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুর থেকে এ ঘটনার ১ মিনিট ৫৮ সেকেন্ডের এক একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে জেলাজুড়ে চলছে আলোচনা সমালোচনা।
নাঙ্গলকোট উপজেলার ভোলাইন বাজার উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সভাপতি পদ নিয়ে বিরোধের জেরে এই হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৮ মে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদারের বড় ভাই ড. মীর আবু সালেহ শামসুদ্দীন শিশিরকে ভোলাইন বাজার উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সভাপতি হিসেবে সুপারিশ করেন কুমিল্লার জেলা প্রশাসক। সে হিসেবে শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান তা প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছে পাঠান।
বিষয়টি জানার পরপরই সাবেক এমপি আবদুল গফুর ভূঁইয়া ফোনে শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ ও নানা হুমকি দেন। পরদিন সশরীরে বোর্ডে গিয়ে সহযোগী নিয়ে চেয়ারম্যানকে ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
অডিও রেকর্ডে আবদুল গফুর ভূঁইয়াকে উত্তেজিত কণ্ঠে বলতে শোনা যায়, ‘একজন সংসদ সদস্যকে আপনি অপমান করতে পারেন না। আমি আপনার অফিসে এসে আপনাকে অপমান করবো। আপনার কত বড় কইলজা (কলিজা) হয়েছে আমি দেখমু আপনাকে। আপনাকে কে এখানে বসিয়েছে, তার কইলজা খুলিহালাইম (খুলে ফেলবো), আপনার কইলজাও খুলমু। বেয়াদবির একটা সীমা আছে। একটা টোকাইর ইয়া নিছেন আপনি। হে চাকুরি করে এখানে, টোকাই।’
ঘটনার পর বোর্ড চেয়ারম্যানের বিশেষ অনুরোধে ড. মীর আবু সালেহ শামসুদ্দীন সভাপতি পদ থেকে ১৯ মে অব্যাহতি নেন। ২০ মে সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি নেতা আবদুল গফুর ভূঁইয়া নিজেই ভোলাইন বাজার উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সভাপতি হন।
এ বিষয়ে জানতে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. শামছুল ইসলাম বলেন, নাঙ্গলকোটের একটি স্কুলের এডহক কমিটি নিয়ে তিনি আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এর চাইতে বেশি কিছু বলতে চাইনা।
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আমিরুল কায়সার বলেন, আমার সঙ্গে সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল গফুর ভূঁইয়ার কথা হয়নি। তবে তিনি কেন আমাকে গালমন্দ করেছেন বিষয়টি আমার জানা নেই। এই বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্যই করতে চাই না।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে গফুর ভূঁইয়া নাঙ্গলকোটে বিএনপির রাজনীতির কবর রচনা করেছেন। ১৯ মে তিনি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানকে ফোনে গালমন্দ করার পর ২০ মে সশরীরে বোর্ড অফিসে গিয়ে চেয়ারম্যানকে লাঞ্ছিত করেছেন। ওই দিনই প্রফেসর মো. শামছুল ইসলাম ফোনে আমার ভাই ড. মীর আবু সালেহ শামসুদ্দীনকে ভোলাইন বাজার উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি নেওয়ার জন্য মিনতি জানান। চেয়ারম্যানের সম্মানার্থে ওই দিনই তিনি অব্যাহতি নেন।
কল রেকর্ডের বিষয়ে জানতে সাবেক এমপি আবদুল গফুর ভূঁইয়াকে ফোন করা হলে তার ব্যবহৃত ২টি মোবাইল নম্বরই বন্ধ পাওয়া যায়। যার কারণে বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।