কুমিল্লায় টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, জনজীবনে ভোগান্তি

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:৩০ মে ২০২৫, ০৬:৩৩ পিএম
কুমিল্লায় টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, জনজীবনে ভোগান্তি

টানা দুই দিনের বৃষ্টিতে কুমিল্লা নগরীর প্রধান সড়ক থেকে অলিগলি সবখানেই হাঁটু থেকে কোমর সমান পানি জমে আছে। নগরজীবন কার্যত অচল হয়ে পড়েছে।

নগরীর কান্দিরপাড়, নজরুল এভিনিউ, সিটি কর্পোরেশন গেট, টমছমব্রিজ, চকবাজার, ঝাঁপানীপুর, মনোহরপুর, রেজিস্ট্রি মাঠ, শাসনগাছা, ঠাকুরপাড়া, আশোকতলা ও বড়শালগাঁওসহ বহু এলাকায় জলাবদ্ধতায় ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

রিকশা ঠেলে চলতে হচ্ছে চালকদের, হাঁটু সমান পানিতে ভিজে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন না পথচারীরা।
শহরের নিচু এলাকাগুলোয় নিচতলার ঘর, দোকান ও অফিসে ঢুকে পড়েছে বৃষ্টির পানি। রান্নাঘর থেকে বাথরুম সব তলিয়ে গেছে। ড্রেন উপচে পড়া নোংরা পানির সঙ্গে মিশে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে চারদিকে, বাড়াছে স্বাস্থ্যঝুঁকি।

নাগরিকদের অভিযোগ, প্রতিবছর বর্ষা এলেই একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি ঘটে, কিন্তু সমস্যার স্থায়ী সমাধানে নেই কার্যকর কোনো উদ্যোগ। অপরিকল্পিত নগরায়ণ, দুর্বল ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও দখল হওয়া খালগুলোই বারবার জলাবদ্ধতার মূল কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

যদিও কুমিল্লা সিটি করপোরেশন দাবি করছে, পানি নিষ্কাশনের জন্য কাজ চলছে, বাস্তবে এর তেমন কোনো প্রভাব দেখা যাচ্ছে না। অনেক এলাকায় টানা কয়েকদিন ধরে জমে আছে পানি।

নগর পরিকল্পনাবিদ আল-আমীন খান বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল ও জলাধারগুলোকে প্রাকৃতিক নকশায় ফিরিয়ে আনতে হবে। পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা ছাড়া এ সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে না। কিন্তু সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠার ১৪ বছরেও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি।’

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) জেলা সভাপতি ডা. মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘খালের প্রশস্ততা ও ডাকাতিয়া নদীর গভীরতা বাড়িয়ে পানি নিষ্কাশনের পথ সুগম করতে হবে। তবেই শহর দীর্ঘমেয়াদি জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাবে।’

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু সায়েম ভুঁইয়া জানান, ‘খাল খননের সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে হয়েছে। খুব শিগগির কাজ শুরু হবে। পাশাপাশি ড্রেনগুলো পরিষ্কারের জন্যও কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।’

এদিকে জেলা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা মো. সৈয়দ আরিফুর রহমান জানান, “বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে।গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে শুক্রবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১৮১ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে। এই বৃষ্টি আরও দুদিন অব্যাহত থাকতে পারে।’