পঞ্চগড়ে লাশ দেখে ফেরার পথে লাশ হলেন আরও তিনজন


পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলায় ট্রাক ও অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে এক শিশু ও দুই নারীসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এক স্বজনের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া শেষে বাড়ি ফিরছিলেন তারা, পথেই ঘটে দুর্ঘটনা।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিকালে উপজেলার বোদা-দেবীগঞ্জ সড়কের পাকুড়িতলা মোড়ের কাছে এ ঘটনা ঘটে।
দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোয়েল রানা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন—শ্যামলী রানী (৩০), তার বড় বোনের কন্যা দেবশ্রী রানী (৭) ও বর্ষা রানী (৩৫)। তারা সবাই দেবীগঞ্জ উপজেলার পামুলী ইউনিয়নের জোত ভুবনপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহতরা পরিবারের কয়েকজন সদস্য মিলে দিনাজপুরের ডোমার উপজেলার ভোগডাবুরী ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে এক আত্মীয়ের মৃত্যুতে গিয়েছিলেন। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া শেষে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় করে দেবীগঞ্জ ফিরছিলেন তারা। পথে পাকুড়িতলা মোড়ে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মাছ বহনকারী ট্রাক অটোরিকশাটিকে সজোরে ধাক্কা দিলে সেটি উল্টে গিয়ে মহাসড়কের পাশে পড়ে যায়।
এতে গুরুতর আহত হন অটোরিকশায় থাকা শ্যামলী রানী, দেবশ্রী রানী, বর্ষা রানী, অজয় কুমার রায় ও পার্বতী রানী।
স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে সেখান থেকে শ্যামলী ও দেবশ্রীসহ তিনজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
সেখানে নেওয়ার পথেই মারা যান শ্যামলী এবং দেবশ্রী হাসপাতালে পৌঁছেই মৃত্যুবরণ করে। এরপর আহত বর্ষা রানী, অজয় কুমার ও পার্বতী রানীকেও রংপুরে স্থানান্তর করা হলে বর্ষা রানী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ট্রাকটিতে মাছ বহনের ড্রাম ছিল এবং চালক দুর্ঘটনার পরপরই পালিয়ে যান।
নিহত শ্যামলী ভাই গৌতম চন্দ্র জানান, ‘আমার শাশুড়ির মৃত্যুতে আমরা কয়েকজন মিলে দেখা করতে গিয়েছিলাম। ফেরার পথে এই দুর্ঘটনায় আমার বোন, ভাগ্নি ও বউদি মারা গেছেন।’
ঘটনার বিষয়ে ওসি সোয়েল রানা জানান, ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ঘাতক ট্রাকটিকে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। তাছাড়া, এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।