স্কুলছাত্রীকে ৬ দিন আটকে রেখে ধর্ষণ, যুবক গ্রেপ্তার


মানিকগঞ্জের শিবালয়ে দশম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ছয় দিন আটকে রেখে ধর্ষণের ঘটনায় মো. হৃদয় হোসেন (২৫) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) দুপুরে উপজেলার আরুয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ শালজানা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মামলা সূত্রে জানা যায়, স্কুলে যাওয়া-আসার সময় আসামি হৃদয় রাস্তাঘাটে ভুক্তভোগীকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতেন। এর একপর্যায়ে গত ১৩ মার্চ রাতে ভুক্তভোগীর বাড়ির সামনে তাকে অপহরণের জন্য ওঁৎ পেতে থাকেন হৃদয়। একসময় সে ঘরের বাইরে বেরোলে মুখে চেতনানাশক মিশ্রিত পানি ছিটিয়ে তাকে অপহরণ করেন।
এ ঘটনার ৬ দিন পর ভুক্তোভোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত ১৯ মার্চ তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন হৃদয়। এরপর তার ভাই ওই শিক্ষার্থীকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন।
এ ঘটনার পর অসুস্থ অবস্থায় তাকে প্রথমে শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসকরা। সেখানে কয়েকদিন ভর্তি থাকার পর তার শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হওয়ায় হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে জাতীয় মানসিক হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন।
এ ঘটনায় শিবালয় পুলিশের পরামর্শে আদালতে মামলা করেন ভুক্তোভোগীর বড় ভাই।
ভুক্তভোগীর মা বলেন, ‘আমার স্বামী অনেক আগে মারা গেছেন। আমার পাঁচ মেয়ে এক ছেলের মধ্যে এই মেয়েটাই সবার ছোট। এদের নিয়ে অনেক কষ্টের মধ্যে দিন কাটাই। আমার মেয়ের এই অবস্থার জন্য দায়ী ব্যক্তির সর্ব্বোচ শাস্তি চাই।’
মেয়েকে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করার মতো টাকা নেই বলেও জানান তিনি।
বাদীপক্ষের আইনজীবী খন্দকার সুজন হোসেন বলেন, ‘গত ২৩ মার্চ নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালে মিস পিটিশন মামলার পর বিচারক অভিযোগটি আমলে নিয়ে শিবালয় থানা পুলিশকে এফআইআর করার নির্দেশ দেন। পরে পুলিশ মামলার প্রধান আসামি হৃদয়কে গ্রেপ্তার করে।’
এতে করে ভুক্তভোগীর ন্যায়বিচার পাওয়ার পথ সুগম হয়। সেইসঙ্গে তার পক্ষে বিনা খরচে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন আইনজীবী।
শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, আদালতের নির্দেশে এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ভুক্তভোগীকে ধর্ষণের বিষয়টি শিকার করেছেন। এ ঘটনায় যথাযথ আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।