‘কম্বাইন্ড ডিগ্রি’ প্রসঙ্গে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল বাকৃবি প্রশাসন

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:৪৬ এএম
‘কম্বাইন্ড ডিগ্রি’ প্রসঙ্গে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল বাকৃবি প্রশাসন

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ভেটেরিনারি ও পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীদের ‘কম্বাইন্ড’ বা সম্মিলিত ডিগ্রির বিষয়টির সমাধানে একাডেমিক কাউন্সিল-পরবর্তী সকল ঘটনায় নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বাকৃবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হেলাল উদ্দীনের সই করা এক বিবৃতিতে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভাষ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ৩১ আগস্ট অনুষ্ঠিত একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় কম্বাইন্ড ডিগ্রির বিষয়টি সমাধানের জন্য গঠিত কমিটির ছয় দফা সুপারিশ সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়। সভা শেষে শিক্ষার্থীরা কর্তৃপক্ষকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানাতে প্রস্তুত থাকলেও পরবর্তীতে স্বার্থান্বেষী মহলের প্ররোচনায় তারা প্রায় ৩০০ শিক্ষক-কর্মকর্তাকে মিলনায়তনে আটকে রাখে। তাদের মধ্যে বৃদ্ধ, হৃদরোগী, ডায়াবেটিস রোগী ও গর্ভবতী শিক্ষিকাও ছিলেন। তীব্র গরমে ও অভুক্ত অবস্থায়ও শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ আলোচনার চেষ্টা চালান এবং তাদের প্রতিনিধিদের বসতে বারবার অনুরোধ করেন, কিন্তু শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাখ্যান করে, এমনকি নারী শিক্ষকদের ভোগান্তির কথাও তারা উপেক্ষা করে। আট ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পরও শিক্ষকরা ধৈর্য ধরে বলপ্রয়োগ না করে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চালান। তবে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপও ব্যর্থ হয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, এ নিয়ে উত্তেজনা বাড়লে অডিটরিয়ামের দক্ষিণ ও মুক্তমঞ্চ দিকের গেটের তালা কে বা কারা ভেঙে দেয়। ফলে দীর্ঘ সময় আটকে থাকা শিক্ষকরা বাইরে আসার সুযোগ পান। এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বাধা দিলে ধাক্কাধাক্কির ঘটনায় কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী আহত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এতে মর্মাহত হয়ে আহতদের প্রতি দুঃখ প্রকাশ করেছে।

শিক্ষকদের স্বজন, কর্মচারী ও শুভানুধ্যায়ীদের ‘বহিরাগত’ আখ্যা দিয়ে শিক্ষার্থীদের উত্তেজিত করা হয়েছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। গেটের তালা ভাঙার ঘটনাটি কারা করেছে তা নিশ্চিত নয়। এটি শিক্ষকদের স্বজন, এলাকাবাসী বা কর্মচারীরা করেছেন কিনা, তা তদন্তে বের হবে। যদি বহিরাগত কেউ জড়িত থাকে তবে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় তাকে আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানানো হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার পরও স্বার্থান্বেষী মহলের প্ররোচনায় ক্যাম্পাসে ভাঙচুর চালানো হয়, যা ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় ৩১ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টায় অনলাইনে সিন্ডিকেটের জরুরি সভা আহ্বান করা হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয়— বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনশৃঙ্খলা জেলা প্রশাসনের হাতে ন্যস্ত থাকবে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকবে।

রেজিস্ট্রারের সেই করা বিবৃতিতে আরও বলা হয়, শিক্ষার্থীদের স্বার্থ ক্ষুণ্নকারী বা হামলাকারী যেই হোক, তার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে এবং তদন্ত শেষে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।