২-১ গোলের জয়ে বছর শেষ করল বাংলাদেশ
২০২৪ সালে ফিফা উইন্ডোর শেষ ম্যাচ ছিল আজ। বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় বাংলাদেশ ২-১ গোলে সফরকারী মালদ্বীপকে হারায়। এতে দুই ম্যাচের সিরিজে মালদ্বীপ একটি ও বাংলাদেশ একটি জেতায় সমতা থাকল।
৯০ মিনিট পর্যন্ত খেলা ১-১ সমতা ছিল। রেফারি ৬ মিনিট ইনজুরি সময় দেন। ইনজুরি সময়ের তৃতীয় মিনিটে বদলি ফুটবলার পাপন সিং জয়সূচক গোল করেন। বাম প্রান্ত থেকে বাড়ানো বলে বক্সের মধ্যে বল পান পাপন। ঠান্ডা মাথায় পাপন শট নিয়ে মালদ্বীপ গোলরক্ষককে পরাস্ত করে স্টেডিয়ামের গ্যালারীতে আলোড়ন তৈরি করেন।
২০২৪ সালে বাংলাদেশ সিনিয়র পুরুষ ফুটবল দল আটটি ম্যাচ খেলেছে। আট ম্যাচের মধ্যে হার ছয়টি ও দু’টি জয়। আট ম্যাচের মধ্যে চারটি বিশ্বকাপ বাছাইয়ের বাকি চারটি প্রীতি ম্যাচ। চার প্রীতি ম্যাচের মধ্যে মাত্র একটি জয় ভূটানের বিপক্ষে আর একটি জয় হোম ম্যাচে মালদ্বীপে।
আট ম্যাচে বাংলাদেশ মাত্র তিনটি গোল করেছে। দু’টি গোলই দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিপক্ষ ভূটান ও মালদ্বীপ। সেপ্টেম্বরে মোরসালিনের গোলে বাংলাদেশ জিতেছে। আজ মজিবর রহমান জনির গোলে বাংলাদেশ সমতা এনেছে। পরবর্তীতে পাপন সিংয়ের গোলে জয় আসল। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ফরোয়ার্ডদের অবস্থা এতেই ফুটে উঠে।
আজ ম্যাচের দু’টি গোল হয়েছে প্রথমার্ধে। দ্বিতীয়ার্ধে দুই দলই গোলের জন্য মরিয়া ছিল। মালদ্বীপের চেয়ে বাংলাদেশই বেশি সুযোগ পেয়েছিল। বদলি ফুটবলার পিয়াস আহমেদ নোভা সুবর্ণ সুযোগ মিস করেছেন। শাহরিয়ার ইমনের জোরালো শট মালদ্বীপের গোলরক্ষক হুসেন শরীফ গ্রিপ করতে পারেননি। তার হাত ফস্কে বল যায় পিয়াস আহমেদ নোভার কাছে। একা গোলরক্ষককে পেয়েও তিনি বল পোস্টে রাখতে পারেননি। নোভার এই মিস ছাড়াও বাংলাদেশ কয়েকটি সুযোগ পেয়েছিল। রাকিব, মোরসালিন কিছু ক্ষেত্রে ফিনিশিং করতে পারেননি। আবার কোনো সময় মালদ্বীপের ডিফেন্ডাররা ভালো ডিফেন্স করেছেন।
দ্বিতীয়ার্ধে মালদ্বীপ বাংলাদেশ অর্ধে তেমন আক্রমণ করেনি। রক্ষণেই বেশি মনোযোগ ছিল। বাংলাদেশ দলের স্পেনিশ হেড কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা বছরের শেষটি জয় দিয়ে করতে কয়েকটি পরিবর্তন করেছেন দ্বিতীয়ার্ধে। খেলার গতি ও প্রাধান্য বাড়লেও স্কোরলাইন পরিবর্তন হয়নি। এত মিসের পর খেলার ফলাফল ড্রই অনুমেয় ছিল। ইনজুরি সময়ের তৃতীয় মিনিটে গোল করে সব হিসেব বদলে দেন পাপন সিং।
প্রথম ম্যাচের মতো দ্বিতীয় ম্যাচেও প্রথমার্ধে পিছিয়ে পড়েছিল বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে সেট পিস থেকে গোল হজম করলেও এই ম্যাচে অন ফিল্ডেই গোল হজম করেছে স্বাগতিক দল। ম্যাচের ২৩ মিনিটে বাংলাদেশের সিনিয়র ডিফেন্ডার তপু বর্মণ ফরোয়ার্ড পাস করতে ভুল করেন। তার বাড়ানো বল মালদ্বীপের মিডফিল্ডার ইব্রাহীম হোসেন পান। তিনি বক্সের মধ্যে থ্রু ঠেলেন আলী ফাসিরের উদ্দেশ্যে। দক্ষ ফরোয়ার্ড ফাসির বাংলাদেশের দুই ডিফেন্ডারের মাঝ থেকে বল জালের উদ্দেশ্যে ঠেলেন। আগুয়ান গোলরক্ষক মিতুল মারমা ছিলেন নীরব দর্শক।
ডিফেন্সের ভুলে গোল হজম করেই চলছে বাংলাদেশ। গত ম্যাচে ১৮ মিনিটে ফ্রি কিক থেকে গোল করেছিল সফরকারী মালদ্বীপ। সেই ম্যাচে ডিফেন্ডাররা মার্কিংই করতে পারেননি প্রতিপক্ষকে। বক্সে আনমার্কড থেকে গোল করেছিলেন আলী ফাসির।
গত ম্যাচে প্রথম একাদশে প্রথমবারের মতো সুযোগ পেয়েছিলেন কানাডা প্রবাসী ফুটবলার কাজেম শাহ। অন্যদের চেয়ে তুলনামূলক ভালোই খেলেছিলেন। তার পরিবর্তে এই ম্যাচে সুযোগ পেয়েছেন মজিবুর রহমান জনি। ৪২ মিনিটে তিনিই বাংলাদেশকে সমতা এনে দেন। বক্সের বাইরে বল পেয়ে দারুণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এক পা থেকে আরেক পায়ে বল নেয়ায় ডিফেন্ডাররা বিভ্রান্তে পড়েন। সেই মুহুর্তে কোনাকুনি শট নেন জনি। মালদ্বীপের গোলরক্ষক ঝাপিয়ে পড়েও রক্ষা করতে পারেননি।
বাংলাদেশ সমতা আনার সুযোগ পেয়েছিল মিনিট চারেক আগে। ৩৯ মিনিটে বাম প্রান্ত থেকে উইঙ্গার রাকিব বক্সে বল বাড়ান ফাহিমের উদ্দেশ্যে। ফাহিম জায়গায় দাড়িয়ে শট নেন। গোললাইন অতিক্রম করার মুহুর্তে গোলরক্ষক হাত লাগিয়ে সেভ করেন। ফিরতি বলে গোলের দারুণ সুযোগ মিস করেন শেখ মোরসালিন। ফ্রি অবস্থানে থেকেও বল পোস্টের উপর দিয়ে মারেন।