আ.লীগ কেন নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না, জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

Bangla Post Desk
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত:১৪ নভেম্বর ২০২৫, ০২:২০ পিএম
আ.লীগ কেন নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না, জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
ছবি : সংগৃহীত

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তবে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় কার্যক্রম স্থগিত হওয়ায় আওয়ামী লীগ নির্বাচন অংশ নিতে পারবে না বলেও জানান প্রধান উপদেষ্টা।

শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানান।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সফররত যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী ব্যারোনেস জেনি চ্যাপম্যানের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। এ সময় তিনি এ মন্তব্য করেন।

বৈঠকে ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচন, অবৈধ অভিবাসন মোকাবিলা, বাণিজ্য বাড়ানো, রোহিঙ্গা সংকট, বিমান ও নৌ খাতে সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে এবং ভোটার উপস্থিতিও হবে ব্যাপক।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, গত ১৬ বছরের স্বৈরশাসনের সময়কার তিনটি ‘কারচুপির নির্বাচনে’ ভোট দিতে না পারা কোটি তরুণ এবার প্রথমবারের মতো ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় কার্যক্রম স্থগিত হওয়ায় আওয়ামী লীগ নির্বাচন অংশ নিতে পারবে না। এ কারণে নির্বাচন কমিশন দলটিকে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের তালিকা থেকেও বাদ দিয়েছে।

তিনি বলেন, জুলাই সনদ বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন সূচনা হিসেবে ইতিহাসে স্থান করে নেবে, যা গত বছরের ঐতিহাসিক জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া লাখো মানুষের আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত করে।

মন্ত্রী জেনি চ্যাপম্যান দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য অধ্যাপক ইউনুসকে ধন্যবাদ জানান। তিনি জুলাই সনদ নিয়ে ন্যাশনাল কনসেনসাস কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোর চলমান আলোচনাকেও প্রশংসা করেন।

চ্যাপম্যান যুক্তরাজ্যের আশ্রয় ব্যবস্থার অপব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং নিরাপদ ও বৈধ অভিবাসনের ওপর জোর দেন।

প্রধান উপদেষ্টা একমত হয়ে জানান, তার সরকার নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সরকার বৈধ পথে বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ গ্রহণে বাংলাদেশিদের উৎসাহিত করছে।

বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট ও বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গার মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার প্রয়োজনীয়তা নিয়েও আলোচনা হয়। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ক্যাম্পে বেড়ে ওঠা তরুণরা আশাহীন, বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ। তাদের শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করতেই হবে।

বৈঠকে ঢাকা-লন্ডনের মধ্যে বাণিজ্য ও সহযোগিতা বাড়ানোর সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরে সামুদ্রিক গবেষণা চালাতে একটি ব্রিটিশ গবেষণা জাহাজ ক্রয় করছে।

এ সময় চ্যাপম্যান দুই দেশের বিমান খাতে আরও দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এয়ারবাস ইন্টারন্যাশনালের প্রধান শিগগির বাংলাদেশ সফর করবেন।

বৈঠকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, এসডিজি সমন্বয়কারী লামিয়া মোরশেদ এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারা কুক উপস্থিত ছিলেন।