ভারতকে কি তবে ‘ভাতে’ই মারবেন ট্রাম্প!
ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা থমকে যাওয়ার প্রেক্ষিতে এবার দেশটির আমদানিকৃত পণ্যের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি জানিয়েছেন, ভারত থেকে চাল এবং কানাডা থেকে সার আমদানির ওপর নতুন শুল্ক আরোপের বিষয়টি তার প্রশাসন গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে।
সোমবার (স্থানীয় সময়) হোয়াইট হাউসে মার্কিন কৃষকদের জন্য একটি বিশাল আর্থিক ত্রাণ প্যাকেজ ঘোষণার সময় ট্রাম্প এই মন্তব্য করেন। এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, বৈঠকে ট্রাম্প এশীয় দেশগুলো থেকে কৃষিপণ্য আমদানির কঠোর সমালোচনা করেন। তার দাবি, বিদেশি পণ্যের অবাধ প্রবাহের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় কৃষকরা তীব্র প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হচ্ছেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘোষণা করেন, যুক্তরাষ্ট্রের কৃষকদের সহায়তা করতে তার প্রশাসন ১২ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি নিশ্চিত করেন, এই অর্থের সংস্থান হবে বাণিজ্য মিত্রদের ওপর আরোপিত শুল্ক থেকে প্রাপ্ত রাজস্বের মাধ্যমে।
ট্রাম্প বলেন, ‘অনেকে এমনভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে ব্যবহার করেছে, যা ইতিহাসে দেখা যায়নি। আমরা বিপুল পরিমাণ পণ্য বাইরে থেকে আনছি, আর এজন্য দেশীয় উৎপাদকরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।’
তিনি আরও যুক্তি দেন যে, কৃষি খাতকে রক্ষা করতে শুল্ক আরোপ তার কাছে যৌক্তিক সমাধান, কারণ পূর্ববর্তী প্রশাসনের কাছ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া মুদ্রাস্ফীতি ও বাজারদরের অস্থিরতায় এই খাত দীর্ঘদিন ধরে চাপের মুখে রয়েছে। ট্রাম্প কৃষকদের ‘জাতীয় সম্পদ’ এবং দেশের ‘অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
বৈঠকে চাল আমদানির বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রে এলে ভারত প্রধান কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। লুইজিয়ানার একজন কৃষক অভিযোগ করেন যে ভারতীয় চাল যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকদের জন্য ‘বিপর্যয়’ সৃষ্টি করছে। এসময় ট্রাম্পকে জানানো হয় যে মার্কিন বাজারে বিক্রি হওয়া শীর্ষ দুটি জনপ্রিয় চাল ব্র্যান্ড ভারতীয় কোম্পানির মালিকানাধীন।
এর প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প বলেন, ‘এটা খুব জটিল নয়। প্রয়োজনে কয়েক মিনিটেই শুল্ক আরোপ করা সম্ভব। বিষয়টি আমরা দেখছি।’
গত এক দশকে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কৃষি বাণিজ্য উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেলেও, ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন শুল্ক আরোপের এই উদ্যোগ নয়াদিল্লির জন্য বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি করতে পারে। বাসমতি চাল, সামুদ্রিক খাদ্য, মশলা এবং বিভিন্ন কৃষিপণ্য রপ্তানি ভারতের আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস হওয়ায়, ট্রাম্পের এই সংকেত ভবিষ্যতের বাণিজ্য আলোচনাকে আরও কঠিন করে তোলার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
