সুদানে স্কুলে হামলা; ৪৬ শিশুসহ নিহত ১১৪
সুদানের দক্ষিণ করদোফান রাজ্যের কালোগিতে আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলসহ একাধিক স্থানে চালানো হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে অন্তত ১১৪ জনে। নিহতদের ভেতর ৪৬টি নিষ্পাপ শিশু রয়েছে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে, স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এমনটাই জানাচ্ছে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলো।
বৃহস্পতিবার কালোগিতে এই মর্মান্তিক হামলার ঘটনা ঘটে। কালোগির নির্বাহী পরিচালক প্রথম দিকে শনিবার আল-জাজিরাকে অন্তত ৭১ জন নিহত হওয়ার তথ্য দিয়েছিলেন।
সুদানের চিকিৎসকদের জোট ‘সুদান ডক্টরস নেটওয়ার্ক’ গত শুক্রবার দিনের শেষে এক বিবৃতিতে জানায়, একই স্থানে দ্বিতীয়বারের মতো অনাকাঙ্ক্ষিত হামলা হয়েছে।
সরকার-সমর্থিত সুদানিজ আর্মড ফোর্সেসের (এসএএফ) দুটি সূত্র আল-জাজিরাকে জানিয়েছে, আরএসএফ প্রথমে কিন্ডারগার্টেন লক্ষ্য করে হামলা চালায়। পরবর্তীতে, এই হামলায় হতাহতদের উদ্ধার করতে জড়ো হওয়া বেসামরিক নাগরিকদের ওপর আরও একবার আক্রমণ চালানো হয়। একটি সূত্রের খবর, এই সময় শহরের হাসপাতাল এবং একটি সরকারি ভবনেও বোমা হামলা করা হয়েছে।
এই হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে সুদানে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন উয়েত গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘নিজের বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শিশুদের হত্যা করা শিশু অধিকারের চরম লঙ্ঘন।’ তিনি সংঘাতপূর্ণ সব পক্ষের প্রতি অবিলম্বে এই ধরনের সংঘর্ষ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে আরও বলেন, ‘শিশুদের কখনোই সংঘাতের মূল্য চোকানো উচিত নয়।’
সুদান ডক্টরস নেটওয়ার্ক এই হামলাকে ‘আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন’ বলে অভিহিত করেছে। তারা বলেছে, বেসামরিক মানুষ ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে ধারাবাহিক হামলার অংশ হিসেবে এই আক্রমণ চালানো হয়েছে।
২০২৩ সাল থেকে সুদানের সেনাবাহিনী (এসএএফ) এবং আরএসএফের মধ্যে তীব্র লড়াই চলছে। এসএএফ দেশের কেন্দ্র ও পূর্বাঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে। অন্যদিকে, আরএসএফ উত্তরাঞ্চলীয় করদোফান এবং দারফুর অঞ্চলে নিজেদের প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা করছে। এই দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতে দরিদ্র দেশটি থেকে লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
