যুক্তরাজ্যে ট্রেনে ‘ভয়াবহ’ হামলা
শনিবার সন্ধ্যায় যুক্তরাজ্যের পূর্বাঞ্চলীয় কেমব্রিজ শহরের কাছে একটি চলন্ত ট্রেনে ভয়াবহ ধারালো অস্ত্রের হামলায় কমপক্ষে নয়জন যাত্রী মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন। বিবিসি জানিয়েছে, আহতদের অনেকের অবস্থা অত্যন্ত গুরুতর এবং তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লড়াই করছেন। পুলিশ এই হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এই ঘটনাকে 'ভয়াবহ' বলে বর্ণনা করেছেন। এক্স প্ল্যাটফর্মে এক বিবৃতিতে তিনি হান্টিংডনের কাছে ট্রেনে সংঘটিত এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। স্টারমার বলেন, "আহতদের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা রইল এবং দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য জরুরি সেবাদানকারী সংস্থাগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।" তিনি এলাকায় অবস্থানরত সবাইকে পুলিশের নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানান।

ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ ঘটনাটি শুনে গভীর মর্মাহত হওয়ার কথা জানিয়েছেন। তিনি তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে কোনো ধরনের অনুমান বা মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানান। বিরোধীদলীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস ফিলপ এই ঘটনাকে 'নির্মম গণহামলা' বলে উল্লেখ করে দ্রুত তদন্তের আপডেট দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
ব্রিটিশ ট্রান্সপোর্ট পুলিশ (BTP) জানিয়েছে, হামলার কারণ ও উদ্দেশ্য এখনও নির্ধারণ করা যায়নি, এবং তদন্তে সন্ত্রাসবিরোধী পুলিশ সহায়তা করছে। BTP-এর চিফ সুপারিনটেনডেন্ট ক্রিস কেইসি বলেন, "আমরা দ্রুত তদন্ত চালাচ্ছি... তবে এই পর্যায়ে হামলার কারণ নিয়ে অনুমান করা সমীচীন হবে না।"
কেমব্রিজশায়ার কনস্ট্যাবুলারি জানায়, ডনকাস্টার থেকে লন্ডনের কিংস ক্রসগামী এলএনইআর (LNER) ট্রেনে পিটারবরো স্টেশন ছাড়ার কিছুক্ষণ পরই এই ঘটনা ঘটে। শনিবার সন্ধ্যা ৭টা ৩৯ মিনিটে হান্টিংডন স্টেশনে পুলিশকে ডাকা হয়। সশস্ত্র পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ট্রেনটি থামিয়ে দেয় এবং সন্দেহভাজন দুইজনকে গ্রেপ্তার করে।

হামলার সময়কার ভয়াবহতা ফুটে উঠেছে প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্যে। স্কাই নিউজকে একজন যাত্রী জানান, একজন রক্তাক্ত যাত্রী ট্রেনের ভেতর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে চিৎকার করছিলেন, "ওদের হাতে ছুরি আছে, আমাকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে।" লোকটি প্রবল রক্তক্ষরণ নিয়ে মেঝেতে প্রায় পড়ে যাচ্ছিলেন এবং ট্রেন থামার সঙ্গে সঙ্গেই তাকে অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে যাওয়া হয়।
অন্যান্য প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছুরিধারীর হাত থেকে বাঁচতে আতঙ্কিত যাত্রীরা ট্রেনের ভেতরে দৌড়াচ্ছিলেন। কেউ কেউ দাবি করেন, আহতের সংখ্যা ৬ থেকে ৮ জন হতে পারে, যদিও অন্য সূত্রে এই সংখ্যা ১২ পর্যন্ত হওয়ার কথা বলা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে দেখা যায়, সশস্ত্র পুলিশ এক ব্যক্তির দিকে অস্ত্র তাক করেছে, যার হাতে বড় একটি ছুরি ছিল। পুলিশ এরপর টেজার ব্যবহার করে তাকে নিয়ন্ত্রণে আনে।
